বরিশাল ক্রাইম নিউজ

বরিশাল ক্রাইম নিউজ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা

Print Friendly, PDF & Email

বানারীপাড়ায় সিংহভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার একুশের চেতনা থেকে বঞ্চিত নতুন প্রজন্ম


রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া প্রতিনিধি :: ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন মহান ২১ ফেব্রæয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মায়ের মুখের ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য সারা বিশ্বে একটি মাত্র জাতি রক্ত দিয়েছে। আর সেই গৌরবের জাতি বাঙালী জাতি। অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল সোনার বাংলা বিনির্মাণে একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হলো মুক্তিযদ্ধের শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ ও ভাষা আন্দোলনের শহীদ মিনার।

কিন্তু পরিতাপের বিষয়, বানারীপাড়ায় সিংহভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও একুশের চেতনা লালন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার বেশির ভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে শহীদ মিনার থাকলেও সিংহভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই। বানারীপাড়া উপজেলার ১২৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি স্কুলে শহীদ মিনার রয়েছে।

এছাড়া উপজেলার ২০ টি মাদ্রাসার মধ্যে একটিতেও শহীদ মিনার নেই। ফলে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একুশের চেতনা ধারণ ও লালন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইক্লোন শেল্টারসহ বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার ও শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় প্রতি বছর চাঁদা তুলে ‘কলা গাছের’ শহীদ মিনার তৈরি করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা রাস্তার মোড়ে মোড়ে দিবসটি পালন করতে দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম বলেন, পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের স্মৃতির শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। তাঁর উদ্যোগে বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার (লাইব্রেরি) প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে বলেও তিনি জানান। বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক বলেন, গত বছর বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে, বাকীগুলোতেও করে দেওয়া হবে। বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন, শৈশব ও কৈশোর কাল থেকে একুশের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

একই অভিমত ব্যক্ত করে বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কমিটির সদস্য বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা, জেলা আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাড. সুভাষ চন্দ্র শীল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার তরুনেন্দ্র নারায়ণ ঘোষ, মুক্তিযুদ্ধকালীন বেজ কমান্ডার বেণী লাল দাস গুপ্ত বেণু, বানারীপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন সহ সচেতন মহল একুশের চেতনা প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন :
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp