বরিশাল ক্রাইম নিউজ

বরিশাল ক্রাইম নিউজ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা

Print Friendly, PDF & Email

র‌্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি : ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়


দুমকি :: র‌্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত ১৫ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ক্যাম্পাস ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে।

গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন অনুষদের ৩য় সেমিস্টারের তিন শতাধিক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সকল শিক্ষা কার্যক্রম বর্জন করে আন্দোলনে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটক তালাবদ্ধ করে রাস্তায় অগ্নিসংযোগসহ আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত ছিল।

এ সময় অভ্যন্তরে থাকা অবরুদ্ধ শিক্ষকরা তালা খুলে দেয়ার অনুরোধ করলেও দাবী মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচী অব্যাহত রাখতে অটল ছিলেন। জানা যায়, পবিপ্রবি’র শের-ই-বাংলা হল-১’র গণরুমে প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত ২৩ জানুয়ারি ৩য় সেমিস্টারের ১৫ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দেন। এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন।

আকস্মিক ছাত্র বিক্ষোভ আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে। এর আগে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে রেজিস্ট্রার বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে শের-ই-বাংলা হল-১ এ উপযুক্ত প্রমাণাদি ছাড়াই তাদের ১৫ জন সহপাঠীকে র‌্যাগিং’র অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। উল্লেখ্য, ১৪ জানুয়ারি হলের নবীনবরণ অনুষ্ঠান থাকায় তারা নবীন শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানাতে গণরুমে প্রবেশ করেন। এ সময় শিক্ষকরা বাইরে থেকে রুমের দরজা লাগিয়ে দেন এবং পরে দরজা খুলে সবার ছবি তুলে রাখেন। পরবর্তীতে ২৩ জানুয়ারি ১৫ শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের বহিষ্কার আদেশ দেয়া হয়।

র‌্যাগিং’র সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় এ ধরনের শাস্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আশাহত মর্মে স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয়। অনতিবিলম্বে ১ কার্য দিবসের মধ্যে আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং অভিযুক্তদের দ্রুত একাডেমিকসহ সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার ২ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে ৩য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দেন। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরাও রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারক লিপিতে তারা সিনিয়রদের উপর আরোপিত মিথ্যা র‌্যাগিং’র অভিযোগ প্রত্যাহার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করাসহ গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করেন। ১ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের র‌্যাগিং করা হয়নি মর্মেও স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩য় সেমিস্টারের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছেন। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত স্মারকলিপির সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, শীঘ্রই একাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহবান করা হবে। প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে যে, আদেশ বলবৎ থাকবে না শাস্তি কমবে।

শেয়ার করুন :
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp